মাথা ঘোরায় কেন? লক্ষন ও চিকিৎসা কি?

মাথা ঘোরানোর সমস্যা অত্যন্ত পরিচিত। অনেকেই বিষয়টি হালকাভাবে নেন, যা ঠিক নয়। মাথা ঘোরানো কোন রোগ নয়, বরং রোগের উপসর্গ মাত্র। মাথা ঘোরানো বা ভার্টিগো দুই ধরনের হয়ে থাকে। ফলস ভার্টিগো ও ট্রু ভার্টিগো।
সিওডো ভার্টিগো বা ফলস ভার্টিগো: রোগী মনে করেন মাথার ভেতর ঘুরছে, মনে হচ্ছে পরে যাবেন, ভারসাম্যহীন হয়ে যাবেন। কিন্তু আসলে মাথা ঘোরে না।
সিওডো ভার্টিগো বা ফলস ভার্টিগোর কারণঃ
অতিরিক্ত মানসিক চাপ, উদ্বেগ, হতাশা ও দুঃশ্চিন্তায় থাকলে সিওডো ভার্টিগো হয়। তখন মানুষ নামাজ পড়তে দাঁড়ানোর মতো কাজ বা কোথাও হাঁটতে গেলেও ধীরস্থির হলে মনে হয়, মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছেন। এ ধরনের ভার্টিগো কোনো বড় রোগ নয় । সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট, কাউন্সেলিং, বিভিন্ন ডোজের ওষুধ দিলেই তা ঠিক হয়ে যায়।
ট্রূ ভার্টিগো: ঘরের ফ্যান ঘুরছে, দেয়াল ঘুরছে, চারদিকে সবকিছু ঘুরছে এমন মনে হলে সেটি ট্রু ভার্টিগো।
ট্রু ভার্টিগোর কারণ:
কারো যদি মস্তিষ্কে স্ট্রোক থাকে, মস্তিষ্কে টিউমার থাকে, মস্তিষ্কে ইনফেকশন থাকে, চোখে সমস্যা থাকে, অনেক ক্ষেত্রে কানে যদি অসুবিধা হয়, কানে যদি কোনো প্যাথলজি থাকে, কানে যদি কম শোনে, কানে পানি যায়, কানে পুঁজ হয়, কানে যদি ইনফেকশন থাকে, অন্তঃকর্ণের প্রদাহ, মধ্যকর্ণের প্রদাহ থাকে তাহলে মাথা ঘোরায়, বমি হয়।
তখন দেখা যায় একজন রোগী বসা থেকে শোয়ার সময় মাথা ঘোরায়, শোয়া থেকে বসতে গেলেও মাথা ঘোরায়, এপাশ ওপাশ করতে গেলে মাথা ঘোরায় অথবা বসা থেকে দাঁড়াতে গেলে মাথা ঘোরায়। এটাকে বিনাইন প্যারোক্সিজমাল পজিশনাল ভার্টিগো বলে।
মাথা ঘোরানোর ঝুঁকি ও চিকিৎসাঃ
সিওডো ভার্টিগোর কোনো ঝুঁকি নেই। কারণ মাথার ঘোরানোর মতো 'ফলস' অনুভূতি হয় এতে। এক্ষেত্রে দৈনন্দিন কাজকর্মে কিছুটা অসুবিধা হয়, কাজে মনোযোগ দেওয়া যায় না।
কিন্তু যাদের প্যাথলজিক্যাল কারণে মাথা ঘোরায় তারা যদি এর চিকিৎসা না করেন তাহলে তা ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
যদি মানসিক কারণে কারো মাথা ঘোরায় তাহলে তাকে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যেতে হবে পরামর্শের জন্য। কানের কোনো সমস্যার কারণে মাথা ঘোরালে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে। মস্তিষ্কের সমস্যার কারণে হলে নিউরোলজি বা নিউরোসার্জন বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসা গ্রহন করা জরুরী।
মাথা ঘোরানো প্রতিরোধের উপায়ঃ
ফলস ভার্টিগোর ক্ষেত্রে-
১. কাজের চাপ কমাতে হবে।
২. বেশি মানসিক চাপ নেওয়া যাবে না।
৩. নিয়মিত পর্যাপ্ত সময় ঘুমাতে হবে।
৪. সকালে ও রাতে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে।
৫. ব্যায়াম করতে হবে।
৬. পুষ্টিকর ও পরিমিত খাবার খেতে হবে।
৭. ওবেসিটি কমাতে হবে।
৮. ধূমপান করা যাবে না।
৯. অ্যালকোহল, মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে।
১০. ইমোশনাল ব্রেকডাউন থাকলে মানসিক কাউন্সিলিং করতে হবে বেশি করে।
আর প্যাথলোজিক্যাল কারণে মাথা ঘোরানো প্রতিরোধে কিছু করার থাকে না। তবে সুশৃঙ্খল ও স্বাস্থ্যকর জীবনাচরণের অভ্যাস করতে পারলে শারীরিক অনেক রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। মাথা ঘোরালে তাৎক্ষণিকভাবে শুয়ে পরবেন। শোয়া থেকে বসতে হলে ধীরে ধীরে বসবেন। আবার বসা অবস্থায় দাঁড়ানোর সময় ধীরে দাঁড়াতে হবে। অর্থাৎ অবস্থান পরিবর্তনের সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মাথা ঘোরার সঠিক কারণ শনাক্ত করে সেই অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মাথা ঘোরা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও পরামর্শের জন্যঃ হটলাইন বা ওয়াটস এ্যাপঃ ০১৭১৭০১৫০৩১

Пікірлер: 1

  • @shuchow4336
    @shuchow43364 күн бұрын

    Thank you ❤

Келесі