প্লাস্টিকের বিকল্প ভাবতে হবে এখনই | Ahsan Rony | Green Savers | Prothom-Alo | PRAN RFL Group

Тәжірибелік нұсқаулар және стиль

পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আলোচনা
‘প্লাস্টিকের বিকল্প ভাবতে হবে এখনই’
পরিবেশ বাঁচলে বাঁচবে পৃথিবী, বাঁচবে মানুষ। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে হবে চিরসবুজ দেশ ও বসবাসযোগ্য পৃথিবী-এমন ভাবনায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ ফেসবুক লাইভ।
প্রথম আলো ডটকমের আয়োজনে এবং প্রাণ-আরএফএলের সহযোগিতায় গতকাল (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানটি। এতে অংশগ্রহণ করেন পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘গ্রিন সেভার্সে’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আহসান রনি এবং পরিবেশবিষয়ক সাংবাদিক ও প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি ইফতেখার মাহমুদ। প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম, প্রথম আলো ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শওকত হোসেন জানতে চান, চলমান এই তীব্র দাবদাহর সঙ্গে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের সম্পর্ক বা প্রভাব কী?
আহসান রনি একবাক্যে জানান, নির্বিচারে গাছ কাটার জন্যই এমনটা হচ্ছে।
তাঁর সঙ্গে যোগ করেন ইফতেখার মাহমুদ, ‘গত দুই যুগ ধরে ঢাকার ৮৬ শতাংশ গাছ ধ্বংস হয়েছে। শুধু ঢাকা নয়, পুরো বিশ্বেই বৃক্ষনিধন হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে। গাছ কাটা, জলাশয় ভরাট, দ্রুত নগরায়ণ এর জন্য দায়ী। নতুন প্রবণতা হচ্ছে, গত তিন বছরে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে আরব সাগর-ভারত সাগর পার হয়ে আমাদের বঙ্গোপসাগরের মাঝখান দিয়ে একটা উত্তপ্ত রেখার মতো তৈরি হচ্ছে, এর ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে।’
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩-এর প্রতিপাদ্য ‘সল্যুশনস টু প্লাস্টিক পল্যুশন’। বাংলায় স্লোগান-প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে, শামিল হই সবাই।
এই প্লাস্টিক দূষণের বিষয়টি পুরোটাই মানুষের সৃষ্টি। কী করলে এটা থেকে সমাধান পাওয়া যেতে পারে? সঞ্চালকের এমন প্রশ্নে আহসান রনি বলেন, ‘প্লাস্টিকের ব্যবহার এত বেড়েছে যে আমরা যে যা-ই কিনি না কেন প্লাস্টিকের যেকোনো কিছু ফ্রি পাই। কেউ বাজারে গেলে গড়ে প্রতিদিন চার-পাঁচটা পলিথিন ব্যাগ নিয়ে ফেরত আসেন। এর ব্যবহার কমানো কিংবা একেবারে বন্ধ করে দেওয়া আসলে মানুষের হাতেই।’
ইফতেখার মাহমুদ বলেন, ‘সম্প্রতি ফ্রান্সে আলোচনা করা হচ্ছে, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো নিয়ে এবং ২০৪০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক একেবারে নিষিদ্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে। বর্তমানে পৃথিবীর মাটিতে ৯ লাখ কোটি টন প্লাস্টিক জমা আছে। ফেলে দেওয়ার পর মাটিতে, নদীতে এমনকি ঢাকার বাতাসেও মাইক্রো প্লাস্টিক রয়েছে, যা শরীরের জন্য খুব খারাপ। প্লাস্টিকের পণ্য বর্জন এবং জিনিসপত্র বহনের জন্য আমাদের আসলে সোনালি আঁশের কাছেই ফিরে যাওয়া উচিত।’
প্লাস্টিক দূষণ থেকে বের হওয়ার জন্য গ্রিন সেভার্স কী কাজ করছে? জানতে চান শওকত হোসেন।
আহসান রনি বলেন, ‘একটা জিনিস খেয়াল করলে দেখা যায়, ঢাকা শহর একসময় গাছের ছিল। এই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার নাম কলাবাগান, কাঁঠালবাগান, সেগুনবাগিচা, গাবতলী, শেওড়াপাড়া, জিগাতলা…। এই যে নামগুলো, এগুলো তো এলাকাভিত্তিক গাছের নামে নামকরণ করা হয়েছে। সেই গাছের শহর এখন হয়েছে প্লাস্টিকের শহর। এই শহরকে তো আমরা আগের স্থানে ফিরিয়ে নিতে পারব না। তবে যে গাছগুলো আছে সেগুলোকে নিধন থেকে বাঁচানো এবং প্রচুর পরিমাণে ছাদবাগানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে কিছুটা সবুজ দিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টায় আছে গ্রিন সেভার্স। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে গিয়ে শিশুদের গাছ চিনতে, গাছের যত্ন নেওয়া শিখতে সহায়তা করছি।’
জলবায়ু-পরিবেশের এত বিপদের মধ্যে কেন আমরা গাছ কাটছি? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সহায়তা করেন ইফতেখার মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘যাঁরা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আছেন, তাঁরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের মনমানসিকতায় আছেন। রাজধানীতে গাছ থাকার কথা ২৫ শতাংশ কিন্তু আছে ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ, তাও সেগুলো কাটার জন্য তোড়জোড়। নীতিনির্ধারকদের মনোভাব হলো, গুলশান-বনানীর এত কোটি টাকার এমন একটা জায়গায় অল্প দামের একটি আম-কাঁঠাল গাছ নষ্ট করছে, সেই চিন্তায় তাঁরা গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কিন্তু এই শহরের মানুষ হতাশাগ্রস্ত, বিষাদে আক্রান্ত হলে ইট-কাঠ তাদের আরও বিষণ্ন করে দেয়, সবুজের কাছে গিয়ে মন প্রশান্ত করার উপায় নগরবাসী পায় না।’
এমন পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আহসান রনির সুপারিশ হলো, সিটি করপোরেশন উন্নয়নের নামে যে গাছগুলো কাটছেন, বিভিন্ন টেন্ডারের মাধ্যমে তারা অর্থনৈতিক মুনাফা পাচ্ছেন, এই ধারা থেকে বের হতে হবে। ব্যক্তিগত লাভের দিকে নজর না দিয়ে সামগ্রিক ভালো থাকাটা ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে সঞ্চালক শওকত হোসেন বলেন, ‘পরিবেশ বিষয়ে আমরা মহাবিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছি। এই এখনই আমাদের সচেতন এবং সক্রিয় হতে হবে। বিষয়টি গুরুত্ব-সহকারে নিয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ প্লাস্টিক রিসাইক্লিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। নিত্যব্যবহার্য প্লাস্টিক যেমন পানির বোতল, পলিথিন, প্লেট-গ্লাস এগুলো বিভিন্ন এলাকার রাস্তা থেকে সংগ্রহ করে ধ্বংসের উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আশা করি, আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে পরিবেশের সুরক্ষায় কাজ করব। প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশ বাঁচাব, মানবজাতিকে বাঁচাব।’
Prothomalo News Link:
www.prothomalo.com/bangladesh...

Пікірлер

    Келесі