ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকা চেনার উপায় ও দমন পদ্ধতি।

ফল আর্মি ওয়ার্ম (FAW) পৃথিবীব্যাপী সংগনিরোধ বালাই হিসেবে পরিচিত। ডিম, কীড়া, পুত্তলি অবস্থায় বিভিন্ন উদ্ভিদ ও উদ্ভিদজাত উপাদান যেমন- চারা, কলম, কন্দ, চারা সংলগ্ন মাটি ইত্যাদির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। পূর্ণাঙ্গ পোকা অনেক দূর পর্যন্ত উড়তে পারে। এমনকি ঝড়ো বাতাসের সাথে কয়েক শত কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তার লাভ করতে পারে।
দমন ব্যবস্থাপনা
যেহেতু পোকাটি ইতোমধ্যে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলসহ সারাদেশে ভুট্টা আবাদকৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে, ফলে ব্যাপক ফসলহানির সম্ভাবনা রয়েছে। পোকাটি যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রাথমিক অবস্থায় পোকাটির অবস্থান চিহ্নিত করতে হবে। চারা গজানোর পর থেকে মোচা আসা পর্যন্ত নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে মোচায় আক্রমণ হলে এ পোকা দমন করা প্রায় অসম্ভব এবং ফলন শূন্যের কোঠায় চলে আসতে পারে। পোকার উপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য ফসল লাগানোর সাথে সাথে ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করতে হবে। এজন্য ভুট্টা ও অন্যান্য পোষক ফসলের জন্য বিঘা প্রতি অর্থাৎ ৩৩ শতকে ৫ থেকে ৬ টি ফাঁদ পাততে হবে এবং সব সময়ই খেয়াল রাখতে হবে পোকার উপস্থিতি। পোকাটি রাতের বেলা আক্রমণ করে থাকে, দিনের বেলা লুকিয়ে থাকে। তাই ভুট্টা গাছে সরাসরি খাওয়ার লক্ষণ বা এদের মল দেখেও আক্রান্ত গাছ শনাক্ত করা যায়। পূর্ণাঙ্গ পোকা, পোকার কীড়া কিংবা ক্ষতির লক্ষণ চেনার জন্য প্রয়োজনে আপনার বøকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাহায্য নিতে পারেন।
ক্ষতিকর-রাক্ষুসে এ পোকাকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রথমত ভুট্টা লাগানোর সময় কোরাজেন (১ মিলি/কেজি বীজ) জাতীয় কীটনাশক দিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। গাছের দুই-তিন পাতা অবস্থা হতেই আক্রান্ত গাছ হতে ডিম বা সদ্য ফোটা দলাবদ্ধ কীড়া সংগ্রহ করে পিষে মেরে ফেলতে হবে অথবা এক ফুট গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। এছাড়া হাত বাছাই ভুট্টার মোচা আসা পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে। আক্রান্ত গাছ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় (৯০-১০০ ফুট এলাকা জুড়ে) অতিদ্রæত জৈব বালাইনাশক স্পোডোপটেরা নিউক্লিয়ার পলিহাইড্রোসিস ভাইরাস (এসএনপিভি) এক লিটার পানিতে ০.২ গ্রাম হারে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছ ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। এভাবে ৭ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার জৈব বালাইনাশক এসএনপিভি স্প্রে করতে হবে। সম্ভব হলে উপকারী পোকা ব্রাকন হেবিটর (ইৎধপড়হ যবনবঃড়ৎ) আক্রান্ত এলাকায় ছেড়ে দিতে হবে। এরা ফল আর্মিওয়ার্মের কীড়ার গায়ে ডিম পাড়ে। ফলে ঐ কীড়াগুলো ভুট্টার ক্ষতি করতে পারে না। যদিও এ পোকা দমনে রাসায়নিক কীটনাশক তেমন কার্যকর নয়, তবে একান্ত প্রয়োজনে প্রোক্লেইম (১ গ্রাম/লি.) বা স্পিনোসেড ট্রেসার (০.৪ মিলি/লি.) বা ভিরতাকো (০.৬ গ্রাম/লি.) বা নাইট্রো (১মিলি/লি.) জাতীয় কীটনাশক আক্রান্ত জমি ও পাশ্ববর্তী এলাকায় পড়ন্ত বিকেলে ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।
আমাদের ফেসবুক পেজঃ / sudiptodae
আমাদের ইমেইলঃ krishisomachar20222@gmail.com
#পোকামাকড় #কৃষি #ভূট্টা #কীটনাশক #FAW

Пікірлер

    Келесі